জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলে ভারসাম্য প্রয়োজন ছিল। বসে থাকলে পার্টি নিম্নগামী হতো। সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে নানান কর্মসূচির মধ্যে রয়েছি। আটটি বিভাগে আটজন বিভাগীয় মহাসচিবের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা প্রতিটি জেলায় গিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বসে দলকে শক্তিশালী করছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন থেকে জাতীয় পার্টিতে নিয়মিত যোগদান চলছে। পার্টি এখন সুশৃঙ্খল, সংঘবদ্ধ এবং শক্তিশালী। জাতীয় পার্টির ৯ বছরের সফল শাসনামলকে তুলে ধরে এভাবে চালাতে পারলে আগামী নির্বাচনের আগেই সরকারের বিকল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করব। জি এম কাদের গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি করোনাকালে জাতীয় পার্টির রাজনীতি, সামগ্রিক দেশের রাজনীতিসহ নানান বিষয়ে কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, সামান্য করোনাভাইরাসের কাছে গোটা পৃথিবী পরাস্ত হয়েছে। করোনা মহামারী আমাদের এটাই শিক্ষা দিয়েছে যে জীবন ধ্বংসকারী মারণাস্ত্র নয় জীবন রক্ষার জন্য বেশি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা এখনো উল্টো পথে হাঁটছি। তিনি বলেন, আমাদের শত্রু যে কোনো ধরনের হতে পারে। যে কোনো দিক থেকে আসতে পারে। সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। জি এম কাদের বলেন, আমাদের দেশের মানুষের সহ্য ক্ষমতা অনেক বেশি। তাছাড়া নানান সমস্যা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশে চিকিৎসা সহায়তা ঠিকমতো দিতে পারলে, সচেতন হলে করোনা মহামারী কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। চিকিৎসা যা হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। আবারও লকডাউন দেওয়া উচিত হবে না। তিনি বলেন, বাজার ভেজালে সয়লাব। করোনা ভ্যাকসিনে ভেজাল হবে না তার নিশ্চয়তা নেই। দেশটা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। করোনা ভ্যাকসিনের টিকায় যে ডিস্টিল ওয়াটার থাকবে না সে বিষয়ে জনসাধারণ উদ্বীগ্ন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা আগে ভ্যাকসিন পাবেন সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা চায় দেশের মানুষ। তাছাড়া নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, সরবরাহ এবং বিতরণ নিশ্চিত করতে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তাও দেশের মানুষ জানতে চায়। ভ্যাকসিন ফ্রিতে দিতে হবে। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে কিন্তু দেখা যায় কাজের বেলায় সব কিছুই অগোছালো। দেশের মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের ব্যাপারে সরকারের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানতে চায়। এ ব্যাপারে সরকারকে সহায়তা করতে জাতীয় পার্টি প্রস্তুত। করোনাকালীন জাতীয় পার্টির তৎপরতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, আক্রান্তদের সহায়তায় কন্ট্রোল রুম খোলা। বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ। মৃত ব্যক্তিকে দাফন করতে কমিটি গঠন। দুস্থদের ত্রাণ বিতরণ। টেস্ট করতে সহায়তা। চিকিৎসা সহায়তায় গাইড লাইন। রিপোর্ট পজিটিভ হলে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসায় সহায়তা, দুস্থদের ত্রাণ বিতরণসহ নানান কর্মসূচি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিতে আমি নিজেও বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি।